চর্যাপদের টেন্টনপাদ আর লুইপাদের কামতাপুরী / রাজবংশী ভাষাত অনুবাদ – বাউদিয়া রায়।


চর্যাপদের অনুবাদ (1) 

📝লেখাইয়া: বাউদিয়া রায় 
টিলার উপরে করিসুরে ডেরা
নাই কুনো মোর পড়শী,
হাঁড়িৎ গুটিকো ভাত নাই মোর
জ্বালা – দুখ দিবানিশি।
ঘরের মাঝিয়া ভরি গেল মোর
সাপ ব্যাঙ্ পকা – মাকড়ে,
ছেকা দুধ ভাই কেমনে যাবেরে
ঘুরিয়া গাইয়ের বাটেরে।
গাইকিনা মোর দেয় না বাছুর,
বিয়াছে হালুয়া গরু,
সাধনের পীঠ ভরো তিন সাঁজ
ছেকিবার করো শুরু।
চেঙেরালা যা বুঝেছে ভালোটা
বুড়ালা বুঝেছে মন্দ,
কালিকার চৈর আজি সাধু হোলে
পালাছে চোরের গন্ধ।
সিংঘ বাঘের নগৎ দেখেছো
দিনাও শিয়ালে যুঝে,
টেন্টনপাদের এই ভালো গান
কয়ঝনে ভালো বুঝে!
(টেন্টনপাদের ‘টালত মোর ঘর নাহি পড়বেষী’ পদের অনুবাদ)

চর্যাপদের অনুবাদ (2)

এই দেহার গছৎ পাঁচকিনা ঠাল,
চলমন মনে সদায় সোন্ধায় কাল।
মাপিয়া নেক্ মহাসুখ পোক্ত করিয়া,
এই গিয়ান আর্জেক গুরুকে পুছিয়া।
সমাধি সারিয়া তোর কিবা ফল হবে,
সুখ – দুখের মরণ তুই এড়াবো কি ভাবে?
ভবলীলা – সুখের আশা ছাড়েক তুই,
শূণ্যের পাখে পাও বাড়া কছে যে লুই।
পিড়া বানালেক তায় ধমন – চমন,
ধ্যানোতে জানিলো লুই বিচার হিমন।
(লুইপাদের “কায়া তরুবর পন্চ বি ডাল। চন্চল চীএ পইঠো কাল।।” পদের অনুবাদ)


পোশনো হৈল্ “বাউদিয়া রায়” কোন সনামধন্য কবির ছদ্মনাম?


1 thought on “চর্যাপদের টেন্টনপাদ আর লুইপাদের কামতাপুরী / রাজবংশী ভাষাত অনুবাদ – বাউদিয়া রায়।”

  1. নারদ বর্মন

    বাউদিয়া জেঠুক শ্রদ্ধা আরহ প্রানাম জানাউ।উমার চলে যাওয়াত হামার ক্ষতি হোইল না নাই আইসা সমায়ত বুঝা যাবে।তবে উমার প্রয়ানত হামরা রাজবংশী কামতাপুরি সমাজ শোকের কান্দন কান্দেচি আজি। যেলা মানষি হামার ভাষায় কাথা কোইতে সরম খায় সেইসমায় উমরা উচ্চশিক্ষিত কলেজের অধ্যাপক হয়াও দেশি ভাষাত লেখিসেন। একটা সমায় ছিল যেখুন অরাজবংশী সমাজ দেশি ভাষাত কাথা ক‌ওয়া মানষিক দেখিলে ঘিন করে, তাচ্ছিল্য করে। হামার দেশি শিক্ষিত মানষি লাও সেইতানে শরমে দেশি ভাষাত কথা নি কহে বাংলাক ব্যবহারিক ভাষা হিসাবে বাছি নিতে একপ্রকার বাইধ্য হয়।
    কোচকামতাপুরের প্রাচিন ভাষা কামতাপুরি আরহ কামতাপুর বেগল রাইজ্যের বাদে উত্তাল আন্দোলন। টগবগিয়া গাভুর রক্তের দেশি শিক্ষিত ছাওয়ালার হাতত অগ্নেয়াস্ত্র তুলে নুয়াতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বেসামাল অবস্থা। এই বেগতিক দেখিয়া রাইজ্য সরকার কঠোর হোইল। বাছি বাছি রাজবংশী গাভুর চেংড়ালাক মিথ্যা মামলাত ফাসাইল আরহ ফেক এনকাউন্টার করিল। উত্তরবঙ্গের চাইরোপাকে উত্তাল পরিবেশ । চামচা মিডিয়া চুপ, ভয়ে জড়সড় রাজবংশী কামতাপুরি সমাজ। ভয়ে নিজের মাওয়ের ভাষাত কাথা না কয়। দেশি কামতাপুরি ভাষার স্বকৃতির দাবি ত দূর অস্ত!
    আর ঠিক সেই সমায়তে এইনাখান প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও স্রোতের উল্টাপাখে হাটা দিলে আনন্দচন্দ্র কলেজের গাভুর লেকচারার গিরিজাশঙ্কর রায়। মাওয়ের ভাষাত কাথা কোইতে আটকায় কে? মাওয়ের ভাষাত সাহিত্য চর্চা করিতে উমাক থামায় কে? যেহেতু কামতাপুরি শব্দটা উচ্চারণ করা সেই সমায় পশ্চিমবঙ্গত বিচ্ছিন্নতাবাদ আরহ রাষ্ট্রদ্রোহীতা করার সমান সেইবাদে উমরা কামতাপুরি শব্দটাকে বাদ দিয়া থুইল। যেহেতু দেশি ভাষায় কাথা ক‌ওয়া বেশিরভাগ মানষিয়ে রাজবংশী সেই বাদে উমরা রাজবংশী ভাষা নাম দিয়া শুরু করিল ম‌ওয়ের ভাষাত সাহিত্য চর্চা। আর ছদ্মনাম নিলেক বাউদিয়া রায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.