‘মাশান’ ওক ‘মশান’ বনে দিয়া কোন শিপাছেড়া উপন্যাস লেখিছেন সৌমনা দাসগুপ্ত ?

‘মাশান’ ওক ‘মশান’ বনে দিয়া কোন শিপাছেড়া উপন্যাস লেখিছেন সৌমনা দাসগুপ্ত ?

লেখক : পীযূষ সরকার

আমি অবাক হই, কষ্ট পাই, সন্দেহ করি যখন কেউ একটি ‘ভুল’ (ইচ্ছাকৃত কিনা জানিনা);করে এবং দ্বিতীয় জন সেই ‘ভুল’ কে এড়িয়ে শুধু সম্পর্ক ও যোগাযোগ রক্ষা বা তৈলমর্দন প্রক্রিয়াকে বেশি গুরুত্ব দেন । ধরুন , ‘নায়েব আলী টেপু’ কে নিয়ে ডকুমেন্টারি , তার শিরোনাম ‘নাই আলী টেপু’ , দেখবেন আপনি সেই ডকুমেন্টারি ???? হয়তো দেখতে পারেন, ‘গর্বিত’ হতে পারেন, কিন্তু আমি মাটির ছেলে, লোকসংস্কৃতি আমার মা , ভাওয়াইয়া, মাশান,বিষহরা, পালাটিয়া, হুদুম আমার রক্তে মিশে আছে এবং তাতে কোনও জল মিশতে পারেনা । আমি আমরা নিজে ‘মাশান’ পূজা করি , পদ্ধতি জানি ,শ্রদ্ধা করি , শ্রদ্ধা শেখাই অন্যকে । বয়স কম কিন্তু ছ্যাবলামি নেই আমার ভেতর কোনো, সিরিয়াস বিষয়কে তরল করার মানসিকতা নেই , জোকার সাজতে পারিনা হালকা রঙচঙ লাগিয়ে ।

শব্দের বাংলাকরণ –

কারণ আমি দেখেছি ‘মরুচবাড়ি’ কী করে ‘মরিচ বাড়ি’ হয় , দ্যাওচড়াই>দেওচড়াই , আঈরাণী চিতলিয়া >অয়রাণী চিতলিয়া, দিগলাপাড়া>লম্বা পাড়া , নাঙলগ্রাম>লাঙ্গল গ্রাম , ফান্দে পড়িয়া বগা >ফান্দে পইড়া বগা , যদি বন্ধু যাবার চান> যদি বন্ধু যাইবার চান ……আমি ,আমরা ভয় পাই আপনাদের । আমি হাত জোড় করে অনুরোধ করি লোকসংস্কৃতি নিয়ে গবেষণার আগে ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স হোক, শ্রদ্ধা ভক্তি শিখুন , নিখাদ ও সৎ হন , নগরায়ন ঘটাবেন না । ‘মাশান’ নিয়ে উপন্যাস লেখার আগে ‘মাশান’ এর সাধনা করুন, পূজা করুন নিজ হাতে , দেখবেন মুদ্রণ প্রমাদ বলে চালিয়ে দিতে হবে না কোনো কিছুই । এবার কিছু পয়েন্টে আসি:

১. সুবীর দা (Subir Sarkar)পোস্ট করলে , দুইঘন্টা গেলো , অনেকে আহা ! উহু করলো , তুমি লাইক দিলে , প্রতিউত্তর দিলে ! আমি কমেন্ট করার পরই তোমার সংশয় হলো হঠাৎ ? পোস্ট এডিট করতে হলো ? কেন এর আগে চোখে পড়লো না ? লোকসংস্কৃতির সৎ চিন্তক হলে তো কুর্নিশ জানানোর আগে ,প্রথমেই একজন রাগী শিক্ষকের মতো শিরোনাম নিয়েই কথা উঠতো , একটা শব্দও তো অপচয় করলে না সে বিষয়ে ? এত্তো সহজ ‘লোকসংস্কৃতি’ বিষয়টা ? শুধু ডেটা কালেক্ট করো আর জোড়া লাগাও , এরম কি বিষয়গুলো ? তোমাকে ভাবালো না ?

২. মাননীয়া লেখিকার (Soumana Dasgupta) চোখেও একই সময় পড়লো !!!! এবং উনি বেগতিক দেখে বলে দিলেন মুদ্রণ প্রমাদ ! উনি পাননি এখনো পত্রিকা ! এই পোস্টিও দুঘন্টা যাবৎ চোখে পড়েনি । কিচ্ছু দেখেননি উনি । আমি কমেন্ট করার পরই উনি ঘুম থেকে উঠলেন এবং দেখলেন – ইয়েস , মুদ্রণ প্রমাদ ! ‘মাশান’ ……… ‘মশান’ হয়ে গেছে । এতবড়(?) একটা পত্রিকায় ! উফ্ ! (আশা করি সম্পাদকের দ্বারায় ‘মুদ্রণ প্রমাদ’ স্বীকারে সক্ষম হবেন , আপনার পাঠানো হার্ড বা সফট কপিটির জেরক্স সহ)

৩. উত্তরের আরও কয়েকজন দাদা দিদি কাকু এই পোস্টে লাইক কমেন্ট করেছেন অন্ধের মতো । বা এনারা এভাবে করেই থাকেন । না পড়েই , না বুঝেই আহা ! বাহা ! উফ ! বলে দেন । তাতে সুসম্পর্ক বজায় থাকে । লাভ হয় লভ্যাংশ হয় ! এই তবে সৎ সাহিত্য চর্চা ? আপনারা হয়তো বলবেন ওই সামান্য ‘শিরোনাম’ নিয়ে এতো কথা ? ইয়েস , আপনাদের কাছে যা সামান্য আমাদের কাছে তা ভয়ানক রক্তক্ষরণের কারণ হতে পারে !

৪. কে কসম দিয়েছে আপনাদের যে দাদা ,দিদি মাটির সংস্কৃতিকে তুলে ধরুন ? বলেছে কেউ ? যদি সততা না থাকে , শুধু এর কাছে গান ,ওর কাছে নাচ ,তার কাছে পুথি কালেক্ট করে আত্মিক টান ছাড়াই শুধুমাত্র ব্যক্তিগত উন্নয়ন বা যশপ্রার্থী হওয়ার জন্যই যা খুশি ভুষি পরিবেশন করে কাশবনে শেয়াল ‘রাজা’ সাজার পরিকল্পনা কেন? ভালো আছে লোকসংস্কৃতি ,শুদ্ধ আছে । আপনাদের বা আপনাদের মতোদের হাত লেগেই নষ্ট হচ্ছে indigenous history , indigenous culture … । শুদ্ধ পরিবেশন , ‘র’ উপস্থাপন না জানলে হাতটান স্বভাব ছাড়ুন , প্লিজ !

৫. এই পোস্টের পর আমাকে কেউ কেউ এড়িয়ে যাবেন নিশ্চিত । এখানে লাইক কমেন্ট করতেও আপনাদের ব্যক্তিস্বার্থ ক্ষুন্ন হবে । পীযূষ সরকারের এর নামে পিছনে সমালোচনা করা যাবে ,একঘরে করা যাবে, তাদের বলি পীযূষ সরকার (Pijush Sarkar) এর কোনো দাদা নেই ,দিদি নেই ,গুরু নেই , স্যার নেই , সুযোগসন্ধান নেই , তেলমালিশ নেই। আমি এই প্রান্তিক গ্রামে বসে এই বয়সে যেটুকু সম্মান ,স্নেহ ,ভালোবাসা, আশীর্বাদ পাই ,তা অনেকের কাছেই ঈর্ষণীয় ব্যপার ! কেন পাই ? হাহাহাহা , কোয়ালিটি থাক আর না থাক মশাই , আমি ছ্যাবলা নই, সহজলভ্য নই,আলটপকা নই … যা করি তার ভেতর সততা আছে ,ভক্তি আছে, আত্মবিশ্বাসের খনি আছে , মুদ্রণ বা অন্য কোনও ‘প্রমাদ’ বলে চালিয়ে দেওয়ার মতো ফাঁক, ইচ্ছে, সম্ভাবনা নেই ।

আমার মনে হলো এতবড় একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে একটা “মুদ্রণ প্রমাদ” বলে চালিয়ে দিলে বৃহত্তর রাজবংশী সহ উত্তরের অন্যান্য অনেক ভাষাভাষী সৎ মানুষের ভালোবাসার সংস্কৃতি আস্তে আস্তে অবক্ষয়ের মুখ দেখবে (দেখছেই তো!) । একটা করে বিষয় নিয়ে আপনারা নাম কামাইয়ের জন্য আলটপকা তথ্য পরিবেশন করবেন আর একটা অংশ প্রতিবাদ ,প্রতিরোধ ও এফ.আই.আর করতে করতে ক্লান্ত হবে , তাতো হতে পারে না ! কাউকে আঘাত করা আমার উদ্দেশ্য নয় , বরং অনেক বয়োজ্যেষ্ঠদের থেকেও অনেক চুপ ও গম্ভীর থাকি অনেক বিষয়েই । যখন সত্যিকারের আঘাত লাগে , তখনই মুখ খুলি। ভুল হলে ক্ষমা করে দেবেন ছোটবড় সবাই …

2 thoughts on “‘মাশান’ ওক ‘মশান’ বনে দিয়া কোন শিপাছেড়া উপন্যাস লেখিছেন সৌমনা দাসগুপ্ত ?”

Leave a Reply to Admin Cancel Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *