উপলব্ধি –
কতিপয় কোচ রাজবংশী মানুষের কাছে জাতি মাটির রাজনৈতিক পার্টি অনেকটা ধর্মশালার মত। চতুরাশ্রম এর গারহস্থ, বানপ্রস্থ এর পরে সন্যাস নেওয়ার মত। আপনার চারপাশে অনেক লোক কেই দেখবেন বয়সকালে মাতাল জীবন তথা বিভিন্ন রকম অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকার পর যখন ক্লান্ত হয়ে যায় তখন খোল করতাল আর মাথায় তিলক লাগিয়ে কার্তিক মাস পালন করা থেকে শুরু করে কোনো একাদশী পালনও বাদ যায় না।
এটা একধরনের পাপ মোচন আবার শাপ মোচনের চেষ্টাও বলা যেতে পারে। সমাজের কাছে নিজেকে শুদ্ধ দেখানোর চেষ্টা। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও দেখবেন অনেক কোচ রাজবংশী মানুষ প্রথমে রাজ্য বা জাতীয় পার্টির জন্য দিবানিশি শ্রম দিচ্ছেন। আজকে এই মিটিং কালকে ওই মিটিং, ব্লক মিটিং, জেলা মিটিং, রাজ্য মিটিং আরো কত কি? এইসব মিটিং/কাজ কর্ম ওনাদের চাকরী জীবন (কর্মজীবন) হিসাবে করতে বলুন দেখবেন তখন কত কাজের চাপ বলে সরকারকে বা প্রতিষ্ঠানকে গাল মন্দ করছেন। কার জন্য ওনারা এত পরিশ্রম করছেন? …….অবশ্যই নিজের জন্য, নিজের ক্যারিয়ার সমৃদ্ধির জন্য। সমাজে আর চার পাঁচটা লোক যাতে সমীহ করে চলে। কোচ রাজবংশী কিছু নেতাগোছের মানুষের অবশ্য ওতেই সিদ্ধিলাভ, ব্লকের নেতা হওয়ার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর ন্যায় আচরণসুলভ অভিব্যক্তি চলে আসে। ইহজীবনে আর কিছু পাওয়ার নেই ওনাদের কাছে। যেন রাজনীতির চরম শিখরে পৌছে গেছেন।
যখনই পালাবদল ঘটে, কতিপয় এই কোচ রাজবংশী রাজনৈতিক নেতাগুলো কিছুদিন নিজের দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করে উপড়ি তলার অঙ্গুলি হেলনে, এদের মধ্যে কারো কারো আবার এই সময়ে পদন্নতি ঘটে। বুকের ছাতি আরো 2 ইন্চি ফুলে যায় এদের। কিছুকাল এইরকম চেষ্টা করার পর যখন দ্যাখে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না তখন রাজনীতির রঙ পাল্টে শাসক পার্টির দলে যাওয়ার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে কেউ কেউ শাসক দলে মাথাও গুজে দেয়। সমস্যা হয় তাদের যাদের ঠাই হয় না শাসক দলে। যাদের দল পাল্টে শাসক দলে ঠাই হয় না তাদের মধ্যে আস্তে আস্তে ভক্তি ভাব চলে আসে। তাদের মন জাতি আর মাটির প্রতি ব্যকুল হয়ে উঠে, কিছু একটা করতে হবেই জাতি, মাটির প্রতি এই ধারনাটা ধীরে ধীরে গাঢ় হতে থাকে তাদের মনের মধ্যে।
তারা সরাসরি কোনো জাতি মাটির রাজনৈতিক পার্টিতে যোগ দেবেনা। বরং তারা বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কাজের মাধ্যমে নিজের একটা পরিচয়পত্র তৈরী করার চেষ্টা করবে যে ওনার থেকে জাতি দরদী মানুষ আর দুইজন হয়না। ওনারা ওনাদের পুরোনো রাজনৈতিক পার্টির সঙ্গীসাথীদের নিয়ে বিভিন্ন রকম দাবীদাওয়ার কথা তুলে ধরার চেষ্টা করবে বিভিন্ন সময়ে, কিন্তু কখনোই জাতি মাটির পলিটিক্যাল পার্টিতে সরাসরি যোগ দেবেন না। আসলে এই কার্যকলাপের মাধ্যমে ওনারা জাতির মানুষের সমবেদনা আদায় করার চেষ্টা করেন যাতে ওনার পুরানো পলিটিক্যাল পার্টিতে কাজে লাগানো যায়। অনেকে হয়ত কাজে লাগিয়েও ফেলান, আর পরিবর্তে ব্যক্তিগত ভাবে অনেক কিছু সুযোগসুবিধা উপভোগ করেন। যারা এইরকম শত চেষ্টা করেও কিছু করতে পারেন না তারা শেষ পর্যন্ত রাজনীতি থেকে সন্যাস নিয়ে জাতি মাটির সামাজিক সন্যাস হওয়ার চেষ্টা করেন।সামাজিক কাজ কর্মে তাদের কখনো সখনো দেখা পাওয়া অস্বাভাবিক নয়।
# Koch Rajbanshi, # Dharmashala, # Jati Matir Political Party