অগ্রপুরী বিহার: আবিস্কারের অপেক্ষায়
প্রাচীন বরেন্দ্রভূমির কেন্দ্রস্থল হিসেবে নওগাঁ জেলার নাম উল্লেখ করা যায়। সমগ্র নওগাঁ জেলাটি যেন পাল রাজাদের উন্মুক্ত জাদুঘর! সোমপুর মহাবিহার, জগদ্দল মহাবিহার, হলুদ বিহার, বটগোহালী বিহার, অগ্রপুরী বিহার, সম্ভাব্য রামাবতীর ধ্বংসাবশেষ ও আরও অনেক প্রত্নস্থলের অবস্থান এই জেলায় এবং আশ্চর্যের বিষয় এই যে উপরে উল্লিখিত স্থানগুলি পরস্পরের খুব কাছাকাছিই অবস্থিত।
অগ্রপুরী বিহার পাল রাজাদের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কীর্তি।
অগ্রপুরী বিহার বা আগ্রাদ্বিগুন ঢিবি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত নওগাঁ জেলার ধামুইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়ন সদরে আগ্রদ্বিগুন বাজারের পাশেই অবস্থিত একটি প্রত্নস্থল। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।



আগ্রা ও দ্বিগুণ গ্রামদুটিতে প্রায় ৪ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে রয়েছে প্রচুর প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ ও প্রচুর পুরনো পুকুর। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো আগ্রাদ্বিগুণ ঢিবি বা অগ্রপুরী বিহার।
আনুমানিক ৪.৫৭ মিটার উঁচু এই ঢিবির নিচেই রয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ। ঢিবির চারপাশে অনেক ইটের টুকরো,খোলামকুচি ও পাথরখন্ড ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ঢিবিতে প্রাথমিক উৎখননের ফলে পাথরের মুর্তি, পাথরখন্ড ও ইটের তৈরী স্থাপনার কাঠামো কিছুটা উন্মোচিত হয়েছে।
এখানে আবিস্কৃত কালো পাথরের গরুড় বাহন সহ বিষ্ণু মুর্তি ও নারীর মুখমণ্ডলের মুর্তি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আরও অনুরূপ পাথরের তৈরী প্রত্নবস্তু পাওয়া গিয়েছে যা রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর ও কলকাতা জাদুঘরে রক্ষিত আছে। (সুত্র: বাংলাদেশ জেলা গেজেটিয়ার বৃহত্তর রাজশাহী, ১৯৮৪)।
এই বিহারটি কোন পাল রাজার আমলে নির্মিত সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর প্রাথমিক খননের পরে আর বিশদ কোনো উৎখনন কাজ পরিচালনা করেনি। ফলে বিহারটি সম্পর্কে অধিকাংশ তথ্য আজো অজানা রয়েছে। এবং অগুনিত প্রত্ন নিদর্শন মাটির নিচে আবিস্কারের অপেক্ষায় রয়েছে। আমাদেরকেও আরো অপেক্ষা করতে হবে এ বিহারের বিষয়ে অনেক অজানা কথা জানার জন্যে। সে অপেক্ষাতেই থাকলাম।
লিখেছেন: Shahriar Kabir
View All Posts | আপনিও পোস্ট করুন | Advertise your Product or Service |