কামতাপুরী / রাজবংশী ভাষার নাম নিয়ে গবেষণা পত্র কি বলে?

ভাষার নাম নিয়া বাংলা অনুবাদ করা হৈল্ যাতে সগায় বোঝে, গভীর চিন্তা করে আর সঠিক বিচার করে কারন ভাষাই হৈল্ কোচ রাজবংশী কামতাপুরী মানষিলার সামাজিক -সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠার চাবিকাঠি।। 

Reference: Thesis paper: Ethno Cultural Identity crisis of the Rajbanshis…. . By Dr. MC Adhikary (137-139 পাতার খানেক)  

স্যার জর্জ এ গিয়ার্সন তার “লিংগুইস্টিক সার্ভে অফ ইন্ডিয়া” বইটিতে প্রথম রংপুর, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, গোয়ালপাড়ার রাজবংশী মানুষের কথ্যভাষা (dialect) উল্লেখ করেছিলেন। উনি এই কথ্যভাষাকে “রাজবংশী” নাম দিয়েছিলেন যেহেতু বেশীরভাগ রাজবংশী মানুষ এই ভাষাতে কথা বলতেন এবং বাংলা ভাষার উপভাষা বলে উল্লেখ করেছিলেন। গিয়ার্সনের মতে রাজবংশী কথ্যভাষার (dialect) পূর্বদিকের রূপটি একটু অন্যধরনের, এটার একটা উপকথ্যভাষা (sub dialect) রূপ দেখা যায় যা “বাহে” নামে আখ্যায়িত করেছিলেন দার্জিলিঙের তরাই অন্চলে। গিয়ার্সন আরো যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে কোচেরা যারা হিন্দু ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন তারা সাধারণত রাজবংশী কথ্যভাষায় কথা বলে এবং সেটার নাম দিয়েছিলেন ” রংপুরী “। 

1. গিয়ার্সনের পরে বিখ্যাত ভাষাবিদগন যেমন ডঃ সুনীীতি কুমার চ্যাটার্জি, ডঃ সুকুমার সেন তারপর ডঃ নির্মলেন্দু ভৌমিক এবং ডঃ নির্মল দাস প্রমুখ এই ভাষার ভাষাগত এবং সাহিত্যগত দিক ঘাটাঘাাটি করেছেন। 

 2. ডঃ সুনীতি কুমার চ্যাটার্জি এবং ডঃ সুকুমার সেন এই ভাষার আন্চলিক বৈশিষ্ট্য বিচার করে এই ভাষাকে “কামরূপি” নামে পছন্দ করেছিলেন। ডঃ নির্মল দাসও এনাদের সাথেই সহমত ছিলেন যখন এই ভাষার নামকরন করার ব্যাপারে যুক্ত ছিলেন।  

3. ডঃ দাস উল্লেখ করেছেন “রাজবংশী “ এই নামে হলে দুটো ত্রুটি নেতৃত্ব দান করবে যেমন বাহির করার ত্রুটি (error of exclusion) আর ভিতরে ঢোকানোর ত্রুটি (error of inclusion). কামরূপ অন্চলের অনেক স্থানীয় বাসিন্দা যেমন মুসলিম, খেন, যোগী এবং এমনকি কুচবিহারের খাগরাবাড়ি অন্চলের ব্রাহ্মণগন এই ভাষায় কথা বলে তাদের মাতৃভাষা হিসেবেই। সুতরাং এই সকল লোকেদের কে বাহির করা (exclude) হবে “রাজবংশী” নামের মধ্য দিয়ে।  

4. অন্যদিকে মেদিনীপুর, 24পরগনা, হুগলি এবং নদীয়ার রাজবংশী মানুষেরা যারা একই জাতি (same ethnicity) নাও হতে পারে এবং এই ভাষায় কথা বলেনা, এই ভাষার নাম “কামরূপী” কেই সমর্থন করেছিলেন। 

5. রাজবংশী সম্প্রদায়ের তুখোর রাজনীতিবিদ এবং সমাজনেতা উপেন্দ্রনাথ বর্মা ভাষার নাম “রাজবংশী” হিসেবে সমর্থন করেছিলেন।  

6. রায়সাহেব পন্চানন বর্মা, সবচেয়ে ক্ষমতাশালী সামাজিক – রাজনৈতিক নেতা যিনি ক্ষত্রিয় আন্দোলনের জনক হিসেবে জনপ্রিয়, এই ভাষাকে ” কামতাবেহারী” বলেছিলেন।  

7. পূর্ণেন্দুমোহন সেহানোবিস, যিনি রংপুর সাহিত্য পরিষদের বিখ্যাত সদস্য ছিলেন, উনিও রায়সাহেবের দেওয়া ভাষার নাম  “কামতাবেহারী” কেই সমর্থন করেছিলেন। 

8. খুব সম্প্রতি ধর্মনারায়ন বর্মা তার বই “এ স্টেপ অফ কামতাবিহারী ল্যাংগুয়েজ” এই ভাষাকে “কামতাবিহারী” বলেছেন।  

9. অন্যদিকে ডঃ দিজেন্দ্রনাথ ভকত তার বই “রাজবংশী ভাষা সাহিত্যের পরিচয়” এ উল্লেখ করেছেন যে সপ্তম দশক থেকে রাজবংশী ভাষার অস্তিত্ব ছিল। তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন যে রাজবংশী ভাষার সাথে প্রাচীন কামরূপের কপার প্লেটে খোদাই করা ভাষার মিল আছে। ডঃ ভকত আরো দাবী করেন যে কোচ রাজার পৃষ্ঠপোষকতায় যে সাহিত্যের সৃষ্টি হয়েছিল তা রাজবংশী সাহিত্যের নমুনা।