সাহেববাড়ি ঘাটের অক্ষয় তৃতীয়া মেলা। সাহেববাড়ি, জায়গীর চিলাখানা, তুফানগঞ্জ [Tufanganj – Natabari Road]

১৯৭১খ্রিস্টাব্দের ১৯মে, ১৩৭৮সনের ৫ই জ্যৈষ্ঠ এই অক্ষয় তৃতীয়া মেলার সূচনা হয়। অনেকে বলেন, এর কয়েক বছর আগেও এই মেলার সূচনা হয়েছিল। অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য লগ্নে সাহেববাড়ি গদাধর নদীর ঘাটে (Akshaya Tritiya Mela Sahebbari Ghat, Gadadhar River) এই মেলার সূচনা করেন সাহেব বাড়ির রাজগণ কুমার অনিলেন্দ্রনারায়ণ, কুমার মানবেন্দ্র নারায়ণ, কুমার বেনিন্দ্রনারায়ণ এবং এই এলাকার বিশিষ্ট ধর্মপ্রাণ নাগরিক সর্বনাথ সরকার, মহেন্দ্র সরকার, কেরু বর্মন, পানিয়া বর্মন, বালকচন সরকার, গণেশ রায়, গজেন অধিকারি, পর্বনাথ অধিকারী। প্রথম সম্পাদক ছিলেন সর্বনাথ সরকার। ৫০ বছর অতিক্রান্ত হলেও এই মেলা নিয়ে ওই এলাকার জনগণের মধ্যে উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায়।

মেলার সূচনা লগ্নে একটি কমিটি থাকলেও বর্তমানে নদীর এপার এবং ওপার মিলে দুটি কমিটি মেলা নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমান নদীর পশ্চিম পারের কমিটির সভাপতি নরেন দাস এবং পূর্বপাড়ের কমিটির সভাপতি শচীন্দ্রনাথ বর্মন। পুরনো রীতি অনুযায়ী সকালবেলায় স্নান ঘাটে ভগিরথ এর পূজা দিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নান করেন। পুরোহিত কলার ভেড়ার উপর ভগিরথকে প্রতিষ্ঠা করে দুধ, কলা, ফলমূল দিয়ে পূজা দেন। পাশেই তুলসীর ঘট স্থাপন করা হয়। একইভাবে মন্দির প্রাঙ্গণে ষোড়শ উপাচারে মা গঙ্গার আহুতি হয় দুই মন্দিরে। এই আহুতি শুধুমাত্র প্রথম দিন হয়।
হরিবাসর, ভাগবত পাঠ, গীতা পাঠ করা হয় মন্দির প্রাঙ্গণে এবং সবশেষে ভক্তগণকে বিলি করা হয় খিচুড়ি। সকাল-সকাল গদাধরের ঘাটে পুণ্যস্নান করার পর ভক্তবৃন্দগন দই, চিড়া, জিলাপি খায়। মানত ও এই মেলার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মানত হিসেবে অনেকেই কবুতর, হাঁস, হাঁসের ডিম উৎসর্গ করে। অনেকেই পিতৃ তর্পণ (অস্থি বিসর্জন ) করেন এই মেলায়। সখাসখী পাতানোর রেওয়াজও আছে। জেলা তথা উত্তরবঙ্গের নানা প্রান্ত থেকে লোকজন আসেন এই মেলায়।

তিন চারদিন ব্যাপী এই মেলা চলে। রাতের বেলায় কুষাণ যাত্রা গান বিশেষ আকর্ষণীয়। লোকাল শিল্পী এবং বহিরাগত শিল্পী সমারোহে চলে গান বাজনা। প্রচুর দোকানপাট এই মেলায় আসে। খাবারের দোকান, খেলনার দোকান, চুড়িমালার দোকান, নাগরদোলা এই মেলায় বসে।এই মেলা মানুষের ধর্মীয় সাংস্কৃতিক, সম্প্রীতির, ও সহনশীলতার প্রতিচ্ছবি।
Read More
Monument Preservation of Coochbehar. Tragedy begins
Bilshi Saheb bari ghat. Tufanganj Natabari road. গদাধর নদীর পাড়।