গরোখীয়া গোঁসাই থান। Gorokhiya Gosair Than, Sarbhog, Barpeta

VSarkar
0
Gorokhiya gosair than

বৈষ্ণবগুরু শ্রীমন্ত শঙ্করদেব (Srimanta Sankardev) আসামের বরপেটা জেলাকে ধর্মীয় গুরুত্বে বিশেষ স্থান প্রদান করেছিলেন। তাই এই এলাকায় যে কয়েকটি সুপরিচিত ধর্মীয় স্থান রয়েছে যার মধ্যে একটি হল গরোখিয়া গোসাই থান (Gorokhiya Gosair Than)। 

Writer: Kumar Mridul Narayan

গরোখীয়া গোসাই থান ও মহারাজা নরনারায়ণ

বরপেটা জেলার (Barpeta District, Assam) বরানগর (Barnagar) অঞ্চলের ছোট শহর সরভোগ – এ (Sarbhog) এই থান/ধাম। সরভোগকে বৃহত্তর “বরানগর” এলাকার কেন্দ্রস্থলও বলা যেতে পারে। “বরানগর” (Barnagar) নামের অর্থ একটি মহান স্থান। কামতারাজ নরনারায়ণই (Kamataraj Nara Narayan) বরানগর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ব্রিটিশ প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণ না করা পর্যন্ত বর্তমান বরপেটা জেলা হাজোর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। 

প্রায় পাঁচশ বছর আগে (১৫০০ খ্রিস্টাব্দ) এই বরানগর অঞ্চল জনবসতিহীন ছিল। তবে মহারাজা নরনারায়ণের শাসনকালে এই অঞ্চলে জনবসতি শুরু হয়। কথিত আছে যে, মহারাজা নরনারায়ণ (Maharaja Nara Narayan) তাঁর শনি দশা কাটানোর জন্য “বরানগরে” অনেকটা সময় কাটিয়েছিলেন। সেই সময় থেকেই বারনগরের ইতিহাস শুরু হয়। এও শোনা যায় সেই সময় মাত্র ১২টি পরিবার শখ করে এখানে চলে আসেন। চলে আসা মানুষজনকে আবার বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়, যেমন বাঘাকাটা, হেঙ্গামারা, থাগুয়া, মাল, ওজা, মেধী ইত্যাদি। ১৫১০ সাল থেকে কামতা-কুচবিহার (Kamata – Coochbehar)  শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এখানকার ঐতিহাসিক উন্নয়ন ঘটেছে। এই সময়কালে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় সামন্ত-প্রধানরা, যারা প্রাথমিকভাবে ‘ভুইয়া’ নামে পরিচিত, এই অঞ্চলে শাসন করত। কামাতা-কুচবিহার মহারাজাদের  পৃষ্ঠপোষকতায় ভূঁইয়ার অধীনে একটি ‘চাকলা’ গঠন করা হয়। এই ভূঁইয়ারা ভারতের পূর্বাঞ্চল যেমন কনৌজ, গৌড় এবং বাংলা থেকে এসেছিলেন যারা সময়ের সাথে সাথে সাধারণ অসমীয়া জাতিতে পরিণত হন এবং শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের (Srimanta Sankardev) প্রভাবে বৈষ্ণবধর্ম গ্রহণ করেন।

See Images: Gorokhiya Gosair Than

গরোখীয়া গোসাইর থানের ইতিহাস

শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের একজন শিষ্য, যার নাম নারায়ণ দাস, যিনি গরু পালের জন্য একটি ‘থান’ বা স্থানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। তাই নারায়ণ দাসের নামানুসারে স্থানটির নাম হয় গোরোখিয়া (Gorokhiya)। ‘থান’ নামে পরিচিত ভবনটি কীর্তনঘরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, বা এলাকার ঐতিহ্যবাহী বৈষ্ণবধাম বরপেটা সত্রতে (Barpeta Satra) ভক্তিমূলক স্তোত্রের কক্ষের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। বৈষ্ণবধর্মীয় জায়গাটিতে ভক্তরা তাদের প্রার্থনা করতে এবং ইচ্ছা পূরণ করতে এলাকায় ভিড় জমান। ‘থান’-এর ২৫ বিঘা বিস্তীর্ণ এলাকাটি দোল বা রঙিন হোলি উৎসবের জন্য অপূর্বভাবে সাজানো হয়েছে।

তবে সরভোগ (Sorbhog) নামের একটা বিশেষ তাৎপর্য আছে,এই নাম থেকে বোঝা যায় যে এই শহরে প্রচুর পরিমাণে দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন হয় এবং এটি সত্য। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত দুধের ক্রিম ও দইয়ের জন্য সরভোগ বিখ্যাত। বাইরের লোকেরা শহরের আশেপাশে কেনাকাটা করে এবং সুস্বাদু দুধের পণ্য কেনার জন্য এই জায়গা খুব আকর্ষণীয় বলে মনে করে।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)